মুক্তিযুদ্ধের চেতনার তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

লিখেছেন লিখেছেন Md Arif ১৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০৩:৫৫:৩৯ দুপুর



চেতনা এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার যা কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বিশেষ বা কোন জাতী কিংবা কোন গোষ্ঠী থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে অথবা তাদের চরিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। চেতনাকে বইয়ের পাতায় অধ্যায় চাপিয়ে কিংবা কাউকে বলে কয়ে চেতনাদারি বানানো যায়না।

উদাহরণ স্বরুপ বলা যায়, আজ থেকে প্রায় সাড়ে তেরশো বছর পূর্বে আরব বনিকরা এই উপমহাদেশে তাদের চরিত্রের মাধ্যমে ইসলামি চেতনার প্রকাশ ঘটিয়ে উপমহাদেশে ইসলামের প্রচার প্রসার করেছিলেন। যা পরবর্তী সাড়ে চারশত বছরের ইসলামি সম্রাজ্বের ভীত গড়েছিল।

প্রকৃতপক্ষে যারা 'মুক্তিযুদ্ধের চতনার' বাঁশি বাজান তারা কি জানেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কি?

প্রকৃত ব্যাপারটি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে একটি ভাষন দেন। সেখানে তিনি বলেন "“বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুসিত দেশ।

ইন্দোনেশিয়ার পরই এর স্থান। মুসলিম সংখ্যার দিক

দিয়ে ভারতের স্থান তৃতীয় এবং পাকিস্তানের স্থান

চতুর্থ। কিন্তু অদৃষ্টের পরিহাস,

পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী ইসলামের নামে এ দেশের

মুসলমানদের হত্যা করেছে, আমাদের নারীদের বে-ইজ্জত

করেছে। আমি স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীনভাবে বলছি,

আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও

সমাজতান্ত্রিক দেশ। এ দেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-

মুসলমান, বৌদ্ধ-খৃস্টান সবাই সুখে থাকবে,

শান্তিতে থাকবে। যার যা ধর্ম তা স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ

পরিবেশে পালন করবে।”

তার বক্তব্যের এই অংশটি থেকেই সুবিধাবাদিরা 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনা' আবিষ্কার করার চেষ্টা করেন।

এখানে স্পষ্টত শেখ মুজিব প্রথমে ইসলামি চেতনার কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু পরবর্তিতে পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্যাতনের অজুহাতে তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এবং সে জায়গায় তিনি ইসলামি আদর্শের পরিবর্তে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আমদানি করেন।

এখন চেতনার ফেরিওয়ালারা গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সারাংশ গুলোকে নিয়ে জগাখিছুড়ি বানিয়ে সেটাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বানানোর ব্যার্থচেষ্টা করছেন। যা করতে শেখ মুজিব নিজেও ব্যার্থ হয়েছিল। আর সেই ব্যার্থতার সর্বশেষ পরিনতি হল আকাশচুম্বী জনপ্রিয় একজন নেতার জানাযার উপস্থিতি মাত্র আঠার জন!!!!!

সর্বশেষ বলতে চাই , প্রকৃতপক্ষে মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ কোন আদর্শ নেই। আর যে জগাখিচুড়ীকে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বানাতে চাচ্ছে তা কষ্মিন কালেও সম্ভব নয়।

বিষয়: বিবিধ

১১২২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

207731
১৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:১৮
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মুক্তিযুদ্ধ শুধু হবার আগে মুক্তিযুদ্ধের কোন চেতনাই ছিলনা। এখন যেটাকে চেতনা বলা হচ্ছে, সেটা হচ্ছে যার যেভাবে খেয়াল নিজের মত করে একটি বলা হচ্ছে। ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ রাত্রেও যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। সেখানে যুদ্ধের কথা আসে কোত্থেকে, যদি যুদ্ধেরই কোন কথা না থাকে তাহলে, যা চাওয়া হয়নি, চা শুরু হয়নি তার চেতনা কোত্থেকে শুরু হবে!

এটা এক হাস্যকর দাবী, ভবিষ্যতে দেখবেন এই চেতনা নিয়ে এমন গন্ডগোল বাধবে তখন জনগন চিন্তা করবে চেতনা নামের কোন কিছু জাতির ছিল কিনা সেটা নিয়েই তামাশা করবে।
207842
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি অসংগঠিত প্রতিরোধ। এর কোন একক চেতনা ছিলনা। তবে মোটামুটি সকলের একটি লক্ষ ছিল তা হচ্ছে গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা। আর এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে তাকেই ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে।
207928
১৪ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:১৩
Md Arif লিখেছেন : ধন্যবাদ টিপু ভাই ও সবুজ ভাইকে। এই লেখাটি আমার ব্লগে দেয়ার কারনে আমার ব্লগ কর্তৃপক্ষ আমার আইডিটা বিনা নোটিসে ব্যান করে দিয়েছে।
208241
১৫ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
সাদাচোখে লিখেছেন : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আওয়ামীলীগের আবিষ্কার নয়। বরং এ চেতনা 'প্রো ইন্ডিয়ান বাংলাদেশী লবি, ইন্ডিয়ান এজেন্ট গং রা' কন্স্ট্রাকশান করে আওয়ামীলীগের মধ্যে রেডিমেইড অবস্থায় সাপ্লাই করেছে।

আর মাথামোটা অর্থলোভী পেশীনির্ভর আওয়ামীলীগ - গেরুয়া ও খদ্দরে আচ্ছাদিত ষৃঢ়যন্ত্রকারীর সৃষ্ট এ চেতনাকে অনুপম উপহার মনে করে রাজনীতিতে 'চেতনা'র জোয়ার বুঝে না বুঝে বইয়ে চলেছে।

মূলতঃ এ চেতনা আওয়ামীলীগকে এক আত্মঘাতি গর্তের দিকে দাফন করার নিমিত্তে খেদিয়ে নিয়ে চলছে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File